লকডাউনে শহরাঞ্চলে বেকারত্ব বেড়ে প্রায় ৩১% - Get Breaking & Latest Bengali News Online

Breaking

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

লকডাউনে শহরাঞ্চলে বেকারত্ব বেড়ে প্রায় ৩১%

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ রোধে কেন্দ্র গোটা দেশে ২৪ মার্চ থেকে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করার ফলে কলকারখানা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সব বন্ধ রয়েছে। এর ফলে দেশের বেকারত্বের হার ২০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে মুম্বইয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)।

সিএমআইই-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার মহেশ ব্যাসের কথায়, ‘৫ এপ্রিল সপ্তাহান্তে দেশের শহরগুলিতে বেকারত্বের হার ৩০.৯৩ শতাংশ হয়েছে। ৯,৪২৯ জনের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।’ বেসরকারি এই গবেষণা সংস্থাটি প্রতি ত্রৈমাসিকে দেশের পরিবারগুলির আয়, ব্যয়, আমানতের উপর যে সমীক্ষা চালায় তা আপাতত টেলিফোন নির্ভর করে তুলেছে। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকেই টেলিফোনে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তাদের গবেষণার কাজ চালাচ্ছে সিএমআইই।

সংস্থাটির দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মধ্য মার্চের তুলনায় সাম্প্রতিক বেকারত্বের হার তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ২৩.৪ শতাংশ হয়েছে। মার্চের মাঝামাঝি এই হার ছিল ৬.৭ শতাংশ। ১৫ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত এক সপ্তাহে তা বেড়ে হয় ৮.৪ শতাংশ। জানুয়ারি থেকেই ভারতে বেকারত্বের হার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছিল কিন্তু, লকডাউনের পর তা হঠাৎ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ভারতে বেকারত্বের হার ৭.৮ শতাংশ ছিল। মার্চে তা বেড়ে ৮.৭ শতাংশ হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

মহেশ বলেন, ‘২০২০ সালের মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে তা যথেষ্ট দুশ্চিন্তার। ওই পরিসংখ্যানে বার্ষিক এবং মাসিক তথ্যে বিপুল ফারাক দেখা যাচ্ছে এবং যা স্যাম্পল সাইজের ত্রুটির কারণে হতে পারে। কাজেই ওই বিপুল ফারাকের দিকে নজর না দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তার বদলে ফারাকের কারণের দিকে নজর দেওয়া দরকার।’

সংস্থার ওয়েবসাইটে এক ব্লগে মহেশ লিখেছেন, ‘মার্চে দেশে কর্মসংস্থানের হার রেকর্ড তলানিতে নেমে ৩৮.২ শতাংশ হয়েছে।’ এর পাশাপাশি লেবার পার্টিসিপেশন রেট অর্থাৎ, যে সমস্ত ব্যক্তি কাজ করছেন এবং যাঁরা সক্রিয় ভাবে কাজের সন্ধান করছেন তাঁদের সংখ্যা ফেব্রুয়ারিতে ৪২.৬ শতাংশ থেকে কমে মার্চে ৪১.৯ শতাংশ হয়। এই প্রথম লেবার পার্টিসিপেশন রেট ৪২ শতাংশের নিচে নামল। এর কারণ ৯০ লক্ষ কর্মীর কাজ হারানো। গত জানুয়ারিতে গোটা দেশে ৪৪.৩ কোটি ব্যক্তির কাজ থাকলেও মার্চে তা কমে ৪৩.৪ কোটি হয়েছে, মহেশ জানান।

কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বশেষ বেকারত্বের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ মাত্রা ৬.১ শতাংশ ছুঁয়েছে।

দেশে বেকারত্বের হার নিয়ে একটি খসড়া হিসাব প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেন। তাঁর মতে, কেন্দ্রের ঘোষিত লকডাউনের মাত্র দু’সপ্তাহে প্রায় ৫ কোটি মানুষ কাজ হারাতে পারেন।

নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিমাংশুর কথায়, ‘এটা প্রত্যাশিতই ছিল।’ বিশ্বের সব দেশেই বাড়তে শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৫ দিনে প্রায় ১ কোটি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। হিমাংশু বলেন, ‘লকডাউন প্রত্যাহারের পর কী ঘটে সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় তখনও বেকারত্ব বাড়বে।’

তিনি বলেন, দেশের মোট কর্মীর একটা বড় অংশ আবার ঠিকা বা চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত, যাঁদের সামান্যতম আর্থিক সুরক্ষা নেই। লকডাউন উঠে গেলে সরকারকে অর্থনীতিকে চাঙা করার উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে। মানুষ কাজ চায়।



from Business News in Bengali, Latest Bangla Business News, Financial News - Eisamay https://ift.tt/39RNIBN

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন