পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এর মুখ্য উপদেষ্টার পদ থেকে সরলেন প্রশান্ত কিশোর। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী কে লেখা চিঠিতে প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, “রাজনীতি থেকে বিরতি নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত সে বিষয়ে আপনি জানেন। আমি আপনার মুখ্য পরামর্শদাতার দায়িত্ব আর চালিয়ে যেতে পারছিনা। আমি আমার পরবর্তী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত যাতে নিতে পারি, তার জন্য আমার অনুরোধ আমাকে আমার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিন। আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে অত্যন্ত ধন্যবাদ।”
প্রশান্ত কিশোর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এর মুখ্য উপদেষ্টার পদ থেকে সরে গেলেও এই বিষয়টি নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি।বিজেপির ধারণা, আগামী ২০২২ এ পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। এমনিতেই পাঞ্জাবে বিজেপির পাল্লা খুব একটা ভারী নয়। তার মধ্যেই সেই রাজ্যের মানুষ কৃষি বিল নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাবের অন্য একটি নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। তাই এখন পাঞ্জাবে যে প্রশান্ত কিশোর কে প্রচন্ড প্রয়োজন অমরিন্দর সিং এর তা কিন্তু নয়। সম্ভাবনা রয়েছে, অন্য কোন রাজনৈতিক কৌশলিকে খবর দিতে পারেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। তার পাশাপাশি, ২০২৬ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার কন্ট্রাক্ট থাকলেও ২১ বিধানসভা নির্বাচনের পরেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টার পদ আর তিনি সামলাতে পারবেন না।বরং, তার অবর্তমানে আইপ্যাক টিমের অন্যান্য সদস্যরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকবে। তার অন্য কোনো কর্মসূচি আছে বলেও প্রশান্ত কিশোর সরাসরি জানিয়ে ছিলেন।
কিন্তু কী সেই কর্মসূচি? ইতিমধ্যে দিল্লিতে গিয়ে তিন গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি নিজেও জানেন, কংগ্রেসের সঙ্গে যদি না আসা যায় তাহলে কিন্তু সঠিক ভাবে মোদির বিরোধিতা করা সম্ভব নয় এবং আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আঞ্চলিক দলগুলির যদিও জোট গঠন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, কিন্তু তবুও এমন একটি দলের প্রয়োজন হবেই যেই দল সারা ভারতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। আর বিজেপি ছাড়া বর্তমানে একমাত্র দল যেটাকে জাতীয় মর্যাদা দেওয়া সম্ভব সেটা হল কংগ্রেস। তাই এই জোটে যদি কংগ্রেস না শামিল হয় তাহলে কিন্তু বিজেপিকে হারানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এই বিষয়টি নিয়েই মূলত সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর।
এই বৈঠকের পরই রাজনৈতিক মহল মনে করতে শুরু করেছিল, খুব তাড়াতাড়ি কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবেন প্রশান্ত কিশোর। সেই সম্ভাবনায় আরো অক্সিজেন জুগিয়ে এবারে নিজেই কংগ্রেসের দিকে এক পা বাড়িয়ে রাখলেন প্রশান্ত কিশোর। যদি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ্য উপদেষ্টার কাজ চালিয়ে যেতেন তাহলে কিন্তু রাজনীতিতে প্রবেশ করা সম্ভব ছিল না তার পক্ষে। তাই হয়তো রাজনৈতিক কৌশলীর কাজ ছেড়ে দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করার সুযোগ খুঁজছেন প্রশান্ত কিশোর। ৩ গান্ধীর সঙ্গে ওই বৈঠকে মূলত কংগ্রেসের খোলনলচে বদলে ফেলার কথা বলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। এমনকি সূত্রের খবর, গান্ধী পরিবারের তরফ থেকেও প্রশান্ত কিশোরের কথায় সাড়া দেওয়া হয়েছিল। এবারে সম্ভাবনা রয়েছে, সমস্ত দিক থেকে মুখ্য উপদেষ্টার কাজ ছেড়ে দিয়ে সরাসরিভাবে রাজনীতিতে যোগদান করতে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর। যদি প্রশান্ত রাজনীতিতে আসেন তাহলে হয়তো তিনি বেছে নেবেন কংগ্রেসকে, কারণ কংগ্রেস একমাত্র দল যেখানে গেলে তিনি সঠিকভাবে মোদির বিরোধিতা করতে পারবেন। আর যদি এই সম্ভাবনা সঠিক হয়, তাহলে কিন্তু আগামী লোকসভা নির্বাচনে বেশ কিছুটা চাপের মধ্যে পড়বে মোদী ব্রিগেড।
from দেশ – Bharat Barta https://ift.tt/3rY4Cti
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন