১০ বছর ধরে অনেক আশ্বাস দেওয়া হলেও আজও খুলল না রামকৃষ্ণপুর কো-অপারেটিভ ব‍্যাঙ্ক - Get Breaking & Latest Bengali News Online

Breaking

শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০

১০ বছর ধরে অনেক আশ্বাস দেওয়া হলেও আজও খুলল না রামকৃষ্ণপুর কো-অপারেটিভ ব‍্যাঙ্ক

নিউজ ডেস্ক: রামকৃষ্ণপুর কো-অপারেটিভ ব‍্যাঙ্কের খোলার দাবী নিয়ে যেভাবে গত 13ই আগষ্ট সারা সোস্যাল মিডিয়াতে সারাদিন ধরে গ্রাহক, কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষ তাদের পোষ্ট করেছে তাতে সত্যিই হতবাক গ্রাহক কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ সবাই। ফেসবুকে এ প্রোফাইল পিকচার আর হোয়াটস অ‍্যাপে এর ডি পি পরিবর্তন করে যেভাবে তোলপাড় হলো সত‍্যিই তা অভূতপূর্ব। লড়াই কোনো ব‍্যক্তির বিরুদ্ধে ছিলো না। কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ছিলো না। গ্রাহক ও কর্মচারিদের লড়াই নায্য অধিকারের লড়াই। তাদের দুটি দাবী ছিলো। ৪০ হাজার গ্রাহক ও ৬০ জন কর্মচারীর জন‍্য রামকৃষ্ণপুর কোঅপারেটিভ ব‍্যাঙ্ক খুলতে হবে আর দ্বিতীয়ত justice for closed Ramkrishnapur Cooperative Bank।
অনেক কষ্ট করে সাধারণ মানুষ এই ব‍্যাঙ্কে টাকা রেখেছিলেন। ভরসা ছিলো যে এটা একটা ব‍্যাঙ্ক। হতে পারে সমবায় ব‍্যাঙ্ক। কিন্তু রিজার্ভ ব‍্যাঙ্ক তো দেখভাল করে। তবে অসুবিধা কোথায়? ভরসা এবং আস্থা আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়ালো। অনেকে রিটায়ার্ড করার পর শেষ সম্বলটুকু এখানে রেখেছিলেন। আজ কি পরিণতি হলো তাঁদের। অনেক মেয়ের বিয়ের টাকা এখানে গচ্ছিত ছিলো। আজ তাদের কি অবস্থা? গয়না রাখা ছিলো। ১০ বছর ধরে অনেক আশ্বাস বাণী শুনেছেন। কিন্তু সমস‍্যার সমাধান আজ পর্যন্ত হলো না। গ্রাহকদের চোখের জলের আজ আর কোনো মূল‍্য রইলো না। কর্মচারীরা দীর্ঘদিন কাজ করার পর কর্মহীন হয়ে পড়লো। অসহায় অবস্থার সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করতে হচ্ছে। স্ত্রী পুত্র আপনজন নিয়ে তাদের নতুনভাবে বাঁচার লড়াই করতে হচ্ছে। তাদের সামাজিক সম্মান আজ বিলুপ্তির পথে। প্রতি মুহূর্তে তাদের নতুন নতুন সমস‍্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পরিবারের লোকের মুখে অন্ন তুলে দেবার সমস‍্যা, ছেলেমেয়েদের শিক্ষার সমস‍্যা, শারীরিক চিকিৎসা করাবার সমস‍্যা। নানান সমস‍্যায় জর্জরিত তাদের জীবন।
কিন্তু বুঝবে কে? আজ যদি সত‍্যিই করে বোঝার জায়গায় থাকতো তাহলে এই ব‍্যাঙ্ক গত ১০ বছরে খুলে যেতো। সরকারের নানান পরিকল্পনার কথা শোনা যায়। মনে হয় না কি একবারের জন‍্য যে এই ব‍্যাঙ্কটা ৪০ হাজার গ্রাহক ও ৬০ জন কর্মচারীর জন‍্য খোলা দরকার। যেখানে অন‍্যান‍্য অনেক সমবায় ব‍্যাঙ্কের আধুনিকীকরণের জন‍্য সরকার অনুদান দিচ্ছে সেখানে এই ব‍্যাঙ্ক গত ১০ বছর ধরে ব্রাত‍্য কেন?এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? মনে হয় না কি একবারের জন‍্য এই মানুষগুলো নির্বাচন প্রক্রিয়াতেও অংশগ্রহণ করে। মনে হয় না কি একবারের জন‍্য যে এই মানুষগুলোর কিছু দাবী থাকতে পারে। শুধু প্রতিশ্রুতি শুনলে কি তাদের সমস‍্যার সমাধান হবে? সরকারের উচ্চ পদাধিকারীরা সবাই জানেন। মাননীয়া মুখ‍্যমন্ত্রীর কাছেও গ্রাহকদের পক্ষ থেকে এবং কর্মচারিদের পক্ষ থেকে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু ফল পাই নি অসহায় গ্রাহক ও কর্মচারীরা। অপেক্ষার একটা সীমা পরিসীমা থাকে।
এই ব‍্যাঙ্ক খোলা যায় না এমনও নয়। রিজার্ভ ব‍্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক অনুদান দিয়ে এই ব‍্যাঙ্ক খোলা যায়। এই মহামান‍্য উচ্চ আদালতের রায়ে পরিষ্কার করে বলা আছে এই ব‍্যাঙ্ক খোলা যাবে। উচ্চ আদালত এই ব‍্যাঙ্ক পুনর্জীবনের জন‍্য কমিটি গঠন করেছে। কমিটিও আশাবাদী এই ব‍্যাঙ্ক খোলার ব‍্যাপারে। তাহলে অসুবিধা কোথায়?
কেন্দ্রীয় সরকারও যদি এই ব‍্যাপারে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে এই ব‍্যাঙ্কটা খোলে। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমস্ত সমবায় ব‍্যাঙ্ক রিজার্ভ ব‍্যাঙ্কের অধীনে থাকবে। সমস্থ দেখভাল করার দায়িত্ব তাদের। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব থেকে যায়। ভারতবর্ষের সমবায় ব‍্যাঙ্কগুলোর কি অবস্থা এটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশ্চয়ই জানেন। সবচেয়ে বড়ো কথা রিজার্ভ ব‍্যাঙ্কের কাছে পুরো তথ‍্য আছে এই ব‍্যাঙ্ক সম্বন্ধে। ২০১১ সালে রিজার্ভ ব‍্যাঙ্ক পশ্চিমবঙ্গ রাজ‍্যসরকারের একটি মিটিংয়ে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছিলো ৫০ কোটি টাকা দিলে এই ব‍্যাঙ্কের লাইসেন্স ফিরিয়ে দিতে রিজার্ভ ব‍্যাঙ্কের কোনো সমস‍্যা নেই। এখন রিজার্ভ ব‍্যাঙ্ক তথা কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার তার দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না।
মানুষের চাপা উত্তেজনার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে আবার। facebook আর whatsapp এ ভরে তাদের প্রতিবাদ এটাই প্রমাণ করে। অনেকেই হয়তো করেন নি বা করার সুযোগ হয়নি সেইদিন। আগামীকাল কিন্তু তারাও এগিয়ে আসবে বলে গ্রাহক ও কর্মচারীরা মনে করেন। গ্রাহক ও কর্মচারিরা ধারণা খারাপ হবার আর আছেটা কি। তারা তো অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলেছে। বন্ধের ১১ বছরে পা দিয়ে তারা নতুন করে কিছু ভাবতে চাইছে। সফলতা আসবে বলে তাদের ধারণা । সাধারণ মানুষ মনে করে এটা কোনো রাজনৈতিক লড়াই নয়। এটা নায‍্য অধিকারের লড়াই। সাধারণ মানুষ এই লড়াইয়ে তাদের পাশে থাকবে বলে তাদের ধারণা।
গ্রাহক ও কর্মচারীরা মাননীয়া মুখ‍্যমন্ত্রীর কাছে একান্ত অনুরোধ এই বন্ধ ব‍্যাঙ্কটি খোলার ব‍্যাপারে তিনি যেনো সদর্থক ভূমিকা নেন। অনেক গ্রাহক মারা গেছেন। ২ জন কর্মচারী মারা গেছেন। ব‍্যাঙ্ক যদি না খোলে তাহলে এই মৃত্যু মিছিল আরো বাড়বে বলে তাদের দৃঢ় ধারণা। এই চরম অবস্থার মধ‍্যে মাননীয়া মুখ‍্যমন্ত্রী এগিয়ে আসুন এই সমস‍্যা মেটাতে। তাঁরা আশাবাদী হস্তক্ষেপে এই জট কাটবে। মাননীয় সমবায় মন্ত্রীর কাছেও তাঁদের আবেদন বন্ধ এই সমবায় ব‍্যাঙ্কটি খোলার ব‍্যাপারে উনি যেনো সদর্থক ভূমিকা নেন।
The post ১০ বছর ধরে অনেক আশ্বাস দেওয়া হলেও আজও খুলল না রামকৃষ্ণপুর কো-অপারেটিভ ব‍্যাঙ্ক appeared first on বিশ্ব বার্তা.


from হেড লাইনস – বিশ্ব বার্তা https://ift.tt/32icYzp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন