এই সময় ডিজিটাল জেস্ক: করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ রোধ করতে কেন্দ্র ২৪ মার্চ থেকে গোটা দেশে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করায় দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে খুচরো বিক্রেতাদের। লকডাউন ওঠার পর ব্যবসা চালিয়ে যেতে এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ খুচরো ব্যবসায়ীর মোটা অংকের মূলধনের প্রয়োজন হবে। সেই মূলধনের জোগান না পেলে ব্যবসা গোটাতে বাধ্য হবে তাঁরা। বুধবার এ কথা জানিয়েছে দেশে খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (রাই)। রাই-এর চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার কুমার রাজাগোপালন বলেন, ‘সরকার এগিয়ে না এলে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে খুচরো ব্যবসায়ীদের। যে সমস্ত খুচরো ব্যবসায়ী খাদ্যপণ্য ছাড়া অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করে তাদের এক পয়সাও আয় নেই, অথচ কর্মীদের বেতন, দোকানের ভাড়ার মতো নির্দিষ্ট খরচ রয়েই গিয়েছে।’ পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সংগঠনের সদস্য বেশ কিছু খুচরো ব্যবসায়ী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখতে তাঁদের ২০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করতে হবে। অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ৩০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে হবে বলে জানিয়েছে। সব থেকে বড় কথা হল রিলায়েন্স রিটেলের মতো বড় সংস্থা সমেত একাধিক খুচরো ব্যবসায়ীরা শপিং মল এবং রিয়েল এস্টেট মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ‘ফোর্স ম্যাজিওর’ নোটিশ জারি করে আর্থিক বোঝা ভাগ করে নেওয়ার আলোচনা শুরু করেছে। যদিও রিলায়েন্স রিটেল এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সংগঠিত ক্ষেত্রের ছোট, মাঝারি এবং বড় সংস্থা মিলিয়ে মোট ৭৬৮ সদস্যের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছে রাই। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৫১ শতাংশ সদস্য ৬-১২ মাসের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে বলে মনে করছে। অন্যদিকে, ২৪ শতাংশের বিশ্বাস লকডাউন উঠে গেলে ৩-৬ মাসের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। ৮০ শতাংশের মতে অগস্টের মধ্যে মুনাফার কোনও আশা নেই। আগামী ৬ মাসের মধ্যে খাদ্যপণ্য বাদ দিয়ে অন্যান্য সামগ্রী বিক্রয়কারী খুচরো ব্যবসায়ী আবার গত বছরে যা আয় হয়েছিল এ বছর তার মাত্র ৪০ শতাংশ আয় হবে বলে জানিয়েছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ১৮ শতাংশ খাদ্যপণ্য বিক্রেতা, যাদের লকডাউনের মধ্যেও ব্যবসা বন্ধ করতে হয়নি। মল মালিকরা লকডাউন চলাকালীন ভাড়া মকুবে রাজি হলেও আগামী ২-৩ ত্রৈমাসিকে খরচ কমবে না বলেই জানিয়েছে অধিকাংশ খুচরো ব্যবসায়ী। আর তাই খরচ কমনো ছাড়া তাদের আর কোনও পথ নেই, জানিয়ে দিয়েছে। রাজাগোপালনের কথায়, ‘চাহিদা এবং জোগানে ফারাক থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই ভাড়া বাবদ রিটার্ন কমবে। কারণ, মোট খরচের ৩৫-৪০ শতাংশ ভাড়া দিতেই বেরিয়ে যায়। এছাড়া, কর্মীদের বেতন বাবদ ৩০ শতাংশ এবং পণ্য মজুতের জন্যও ভালো খরচ হয়।’ খুচরো ব্যবসায়ীরা পণ্য ও পরিষেবা করে ছাড়ের সুবিধা চাইছে। দোকান বন্ধ থাকলেও বিদ্যুৎ খাতে যে টাকা দিতে হয় তা না নেওয়ার দাবিও জানিয়েছে। সম্পত্তি কর দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্ধিত সময়সীমা এবং ভাড়ার টাকা ভাগ করার দাবিও উঠেছে। সিলেক্ট গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অরুণ শর্মার কথায়, ‘খুচরো ব্যবসায়ী, রেস্তোরাঁ এবং সিনেমা হলগুলির কাছ থেকে ভাড়া না নেওয়ার, পরে নেওয়ার এবং ভাড়ায় ছাড় দেওয়ার অনুরোধ পেয়েছি। আমরা অপেক্ষা করছি। তবে, কেন্দ্র এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে বলেই আমরা আশাবাদী।’
from Business News in Bengali, Latest Bangla Business News, Financial News - Eisamay https://ift.tt/3c2gNvH
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন